পৌরসভা পরিচিতি
নওহাটা পৌরসভার অবস্থান ও পটভূমি:
নওহাটা পৌরসভা রাজশাহী জেলাধীন পবা উপজেলার অর্ন্তগত “ক” শ্রেনীর একটি পৌরসভা। ভৌগোলিক সীমা রেখায় এর অবস্থান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের(রাসিক) উত্তর-সীমানা সংলগ্ন একটি পৌরসভা-যার যাত্রা শুরু ২০০২ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর। এই পৌরসভার উত্তরে মোহনপুর ও তানোর উপজেলা, দক্ষিনে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও ভারতের মুর্শিদাবাদ, পূর্বে পূঠিয়া ও দূর্গাপুর উপজেলা এবং পশ্চিমে গোদাগাড়ি উপজেলা অবস্থিত। রাজশাহী বিভাগীয় শহর হতে এর দূরত্ব ১০কিঃমিঃ। ভৌগলিক ভাবে এটি ২৪০ -৭’ হতে ২৪০ ৩’ অ¶াংশে এবং ৮৮০ ১৭’ হতে ৮৮০ ৫৮ ’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত এবং সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির গড় উচ্চতা ৯.০০মিঃ। বারনই নদী সংলগ্ন গড়ে উঠা নওহাটা পৌরসভা রাজধানী ঢাকা থেকে ২৭০কিঃ মিঃ পশ্চিমে অবস্থিত।
সময়ের পরিক্রমায় ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়ে নওহাটা পৌরসভা প্রায় দুই যুগ অতিক্রম করতে চলেছে। ব্যবসা বানিজ্যের নগরী হিসাবে খ্যাত নওহাটা পৌরসভার ইতিহাস অতি প্রাচিন। বর্তমানে ৪৬.১০ বর্গ কি.মি. আয়তন বিশিষ্ট পৌরসভাটি ০৯টি ওয়ার্ডের সমš^য়ে গঠিত এবং এর মহল্লা সংখ্যা ৪০টি। এই পৌরসভাটি ২১জুন ২০০৬ইং সনে ‘গ’শ্রেণী থেকে ‘খ’শ্রেণীতে এবং ১০নভেম্বর ২০১০ইং সনে ‘খ’শ্রেণী থেকে ‘ক’শ্রেণীতে উন্নিত হয়।
![]() |
![]() |
নওহাটার গোড় পত্তন ও এর নাম করনঃ
কোন ব্যক্তির যেমন নির্দিষ্ট জন্ম সন এবং জন্ম তারিখ থাকে-ঘটা করে তার নাম করন করা হয়। কোন জায়গা বা স্থানের নাম করন সেভাবে হয়না। নওহাটার নাম করনও সেইভাবে হয়নি, এর নাম করন নিয়ে নানা কথা প্রচলিত আছে। যার অনেকটাই জনশ্রæতিমূলক। আসলে জনশ্রæতি উপ্যাখ্যান বা কল্প কাহিনীকে আশ্রয় করে জনপদের নাম করন হয়ে থাকে। নওহাটার নামও সেই ভাবে হয়েছে। উনবিংশ শতাব্দির শেষ এবং বিংশ শতাব্দির প্রথম দিকে এই জনপদের গোড় পত্তন হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
ইংরেজ শাসন আমলে শ্রীরাম পুর/বোয়ালিয়া বা রাজশাহীতে ডাচ-ফরাসি এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রেশম, লাহা শিল্প এবং নীল চাষকে কেন্দ্র করে বহুকুঠি প্রতিষ্ঠা করে। এসব কুঠিতে তুতের চাষ, রেশমগুটি ও নীল চাষের প্রবনতা সৃষ্টির জন্য ইংরেজ বণিক, স্থানীয় ফড়িয়া ও ব্যবসায়ীদের প্রভাবিত করে। এই স্থানীয় ফড়িয়া ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বায়ার কোকারাম মন্ডল ও মহানন্দখালীর লফর/নফর মন্ডল অন্যতম। বায়ার কোকারাম মন্ডল প্রথম বায়াতে রেশম গুটি ও তুত চাষের ব্যবস্থা করেন। বায়াতে শুধু রেশম গুটিই নয়-ধান,চাউল,পাট, চৈতালী কেনাবেচার আড়ৎ গড়ে ওঠে। যাহা পরবর্তীতে গঞ্জে রুপান্তরিত হয়। মূলত কোকারাম মন্ডলের বাড়ি বায়াতে হওয়ায় ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু বায়াতে হয়।
বারনই নদীর শাখা নদী মহানন্দখালী গ্রামের পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বায়ার কোল ঘেষে দক্ষিনে পদ্মা নদীতে গিয়ে পড়ত। সেই কারনে কোকারাম মন্ডলের ব্যবসা কেন্দ্র বায়াতেই গড়ে উঠে। অনুরুপভাবে তৎপরবর্তীতে মহানন্দখালীর লফর/নফর মন্ডলও রেশম গুটি ও তুত চাষে এগিয়ে আসেন। এই তুত চাষ ও রেশম গুটি ব্যবসা নিয়ে এতটাই উন্নতি করেন যে, তিনি অর্থ বৃত্তের মালিক হন এবং ছোট খাট জমিদারী বনে যান। লফর মন্ডলের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বারনই নদীর দক্ষিন তীরে যে ব্যবসা কেন্দ্র বা গঞ্জ গড়ে ওঠে তার পরিবর্তীত রুপ“নওহাটা”। কথিত আছে বায়া গঞ্জ যখন ব্যবসা বানিজ্যে খুব প্রসার লাভ করে, তখন বারনই নদীর শাখা নদী মহানন্দখালী গ্রামের পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত-বর্তমান নওহাটা ডিগ্রি কলেজের পশ্চিমে যে রাস্তা দুয়ারির দিকে গেছে। তার মাঝে নদীর হাতি বাধা ব্রীজটি নির্মানের সময় নওহাটার ব্যবসায়ী ও বাবুরা ঠিকাদারকে হাত করে, ব্রীজটি এতটাই নিচু করে নির্মান করেন যে, তার তল দিয়ে কোন নৌকা পারাপার করতে পারতো না। ফলে বারনই নদীর শাখা দিয়ে বায়াগঞ্জের নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেল এবং বায়াগঞ্জে ব্যবসা বানিজ্যে মন্দা ভাব দেখা দিল। এই সুযোগে মহানন্দখালীর বাবুরা বারনই নদীর দক্ষিন পার্শ্বে যে ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে তোলেন তারই পরিবর্তীত রুপ “নওহাটা”।
নওহাটা=লহট্ট> লহাটা>নহাটা>নওহাটা, এই ভাবেই নওহাটা জনপদের সৃষ্টি হয়েছে।
Govt. Forms
কেন্দ্রীয় ই-সেবা
গুরুত্বপূর্ণ লিংক
মোট পরিদর্শক





![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |